www.kishoreganjnews.com

পৌরসভার উন্নয়নে নিবেদিত মেয়র পারভেজ



[ বিশেষ প্রতিনিধি | ২৯ জুলাই ২০১৭, শনিবার, ৭:৪৬ | এক্সক্লুসিভ ]


নির্বাচিত হওয়ার পর মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন দেড় বছরেরও কম সময়। কিন্তু এই অল্প সময়েই তিনি নিজেকে আলাদা ভাবে তুলে ধরতে সমর্থ হয়েছেন পৌরবাসীর কাছে। দীর্ঘদিনের উন্নয়ন বঞ্চনা ও জনভোগান্তি থেকে পৌরবাসীকে মুক্তি দিতে দিন-রাত অকান্ত ছুটে চলেছেন তিনি। নিজে দাঁড়িয়ে থেকে তদারকি করছেন উন্নয়ন কাজের। মানের প্রশ্নে আপোসহীন থেকে পৌরসভার সামগ্রিক উন্নয়নে নিবেদিতপ্রাণ এই মেয়রের নাম মাহমুদ পারভেজ। যার হাত ধরে প্রথম শ্রেণীর কিশোরগঞ্জ পৌরসভা হয়ে ওঠছে সত্যিকার অর্থেই প্রথম শ্রেণীর। ময়লা-আবর্জনার স্তুপ থেকে বেরিয়ে আসছে নতুন এক পরিচ্ছন্ন ও ঝকঝকে শহর।

মেয়র হিসেবে তাঁর অগ্রাধিকার তালিকায় থাকা রাস্তাঘাটের উন্নয়ন, ড্রেনেজ ব্যবস্থার মাধ্যমে জলাবদ্ধতা পরিস্থিতির উন্নয়ন, যানজট সমস্যার উন্নয়ন ও ময়লা-আবর্জনা অপসারণ এসব কাজে ইতোমধ্যে তিনি তার আন্তরিকতার স্বাক্ষর রেখেছেন। এসবের মাধ্যমে তিনি পৌরবাসীর প্রতি তার দায়িত্বশীলতার পরিচয়ই প্রকাশ করে চলেছেন।

মেয়রের এই কর্মস্পৃহা ও আন্তরিকতায় খুশি পৌর এলাকার সাধারণ মানুষও। তারা বলছেন, পৌরবাসী যে স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষা নিয়ে মাহমুদ পারভেজকে মেয়র নির্বাচিত করেছেন, এখন বাস্তবে তার বাস্তবায়ন দেখার জন্য তারা আশায় বুক বেঁধে রয়েছেন। এখন পর্যন্ত মেয়রের কর্মকাণ্ড তাদের সে আশার সলতেটা জ্বালিয়েই রেখেছে।

এছাড়া সম্প্রতি ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার হেলালুদ্দীন আহমদ কিশোরগঞ্জ পৌরসভা পরিদর্শনে এসে পৌরসভার উন্নয়ন কর্মকাণ্ডসহ বর্তমান পৌর পরিষদের সার্বিক কর্মকাণ্ডে সন্তোষ প্রকাশ করেন।

আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত মেয়র মাহমুদ পারভেজের নেতৃত্বাধীন বর্তমান পৌর পরিষদ গত বছরের ১৪ই ফেব্রুয়ারি দায়িত্বভার গ্রহণ করে। পৌর পরিষদ মনে করে, শুরুতে রাজস্ব তহবিলের স্বল্পতা, যন্ত্রপাতির অভাব এবং ঋণের বোঝার কারণে পৌর নাগরিকদের সেবা প্রদানসহ উন্নয়নকাজ বিঘ্নিত হচ্ছিল। কিন্তু পরবর্তী সময়ে বরাদ্দ আসায় উন্নয়ন কাজে হাত দেয়া সম্ভব হয়েছে। চলমান উন্নয়ন কাজ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার চিত্র তুলে ধরে পৌরসভার পক্ষ থেকে একটা প্রকাশনাও বেরিয়েছে।

পৌরসভার উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়ে সম্প্রতি কিশোরগঞ্জ নিউজ (kishoreganjnews.com) এর সঙ্গে কথা বলেন পৌর মেয়র মাহমুদ পারভেজ। মেয়র মাহমুদ পারভেজ জানিয়েছেন, বর্তমানে পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় ১৭ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ শেষ হয়েছে। এছাড়া আরো ৪০ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। ডিসেম্বর নাগাদ সেসব কাজ শেষ হবে। এসব কাজের অধিকাংশই হচ্ছে রাস্তাঘাটের উন্নয়ন। এসব উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সমাপ্ত হলে কিশোরগঞ্জ পৌর এলাকায় আর কোন ভাঙাচোড়া মূল সড়ক থাকবে না। কিন্তু এসব কাজ মান বজায় রেখে সম্পন্ন করা খুবই কষ্টসাধ্য বিষয়। এছাড়া কাজ তদারকির জন্য পৌরসভার জনবলও প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। এরপরেও আমরা আন্তরিকভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছি।

মাহমুদ পারভেজ আরো জানান, পৌরসভার ময়লা-আবর্জনা অপসারণের জন্য নতুন করে আরো ট্রাক আনা হয়েছে। এতে করে ময়লা-আবর্জনা অপসারণে পৌরসভার সক্ষমতা বেড়েছে। এর ফলে ময়লা-আবর্জনা অপসারণের মাধ্যমে পরিচ্ছন্ন শহর নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। পরিচ্ছন্নতার দিক দিয়ে পৌরসভার সার্বিক অবস্থা আগের তুলনায় অনেক উন্নতি হয়েছে বলেও দাবি করেন মেয়র পারভেজ।

মেয়র জানান, পৌরসভার অন্যতম একটি সমস্যা জলাবদ্ধতা। এর জন্যে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিয়ে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। অনেক সীমাবদ্ধতা ও প্রতিবন্ধকতা থাকার পরও এক্ষেত্রেও বর্তমান পৌর পরিষদ আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

মেয়র মাহমুদ পারভেজ জানান, বর্তমানে ‘ইউজিপ-৩’ প্রকল্পের আওতায় গাইটাল, সরকারি মহিলা কলেজ, পুরাতন কোর্ট, নতুন স্টেডিয়াম, কাচারিবাজার, নীলগঞ্জ মোড়, বত্রিশ এলাকা, জেনারেল হাসপাতাল, কুটিগীদ্দি এলাকা, সুইপার কলোনি ও রথখলা এলাকার মধ্যে ৫ কোটি ২৯ লাখ ২৫ টাকা ব্যয়ে রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণ, খরমপট্টি, নীলগঞ্জ রোড, শোলাকিয়া ঈদগা এলাকা, হয়বতনগর, হারুয়া, ফিসারি রোড, গুরুদয়াল কলেজ লিঙ্ক রোড, বড়বাজার, নগুয়া, হয়বতনগর মুন্সিবাড়ি ও বত্রিশ এলাকায় ৫ কোটি ১৬ লাখ ৭৫ হাজার ৫০০ টাকা ব্যয়ে রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণ এবং খরমপট্টি, পূর্বাশা কাব থেকে কানিকাটা, নগুয়া থেকে উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়, হয়বতনগর বতলা, নগুয়া শ্যামলি রোড থেকে ভাওয়ালিয়া বাড়ি, বত্রিশ জেলা সরনি থেকে গৌরনিতাই আখড়া, কানিকাটা থেকে পুরানথানা ও তারাপাশা এলাকায় ৫ কোটি ২২ লাখ ৬৮ হাজার টাকা ব্যয়ে রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণ কাজ এই পৌর পরিষদ বাস্তবায়ন করছে। এর বাইরে ইউজিপ-৩ প্রকল্পের আওতায় আরো ২২ কোটি ৮৪ লাখ ২১ হাজার ৪২ টাকার প্রাক্কলিত ব্যয়ের কাজ শুরু হচ্ছে।

মেয়র পারভেজ জানান, বর্তমান পৌর মাকেটের স্থলে একটি আধুনিক পৌর সুপার মার্কেট নির্মাণ, ইউজিপ-৩ প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৩৪ কোটি টাকার রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণের কাজ, গুরুত্বপূর্ণ নগর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ২ কোটি ৯০ লাখ ৯৮ হাজার ৯৭২ টাকার রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণের কাজ প্রক্রিয়াধীন আছে। আর গুরুত্বপূর্ণ নগর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় আরো ২ কোটি ৯০ লাখ ৯৮ হাজার ৯৭২ টাকার রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণসহ উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়নাধীন আছে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার আধুনিকীকরণে ডাম্পিং গ্রাউন্ডের জন্য ৩ দশমিক ৫৮ একর জায়গা অধিগ্রহণেরও পরিকল্পনা রয়েছে। প্রস্তাবিত সৌন্দর্য বর্ধন কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে পৌর এলাকায় শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলামের ম্যুরাল নির্মাণ, পৌর ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য বর্ধন, পুরানথানা রিক্সা স্ট্যান্ড ও বটতলা মোড়ে ফোয়াড়া নির্মাণ। এর জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৫০ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

মেয়র আগামী দিনে কিশোরগঞ্জকে একটি পরিকল্পিত ও বাসযোগ্য শহর হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে পৌর পরিষদের উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনায় সকলের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেছেন।

শহরের নগুয়া এলাকার বাসিন্দা আবদুল কাদের জানান, নতুন মেয়র কাজের মানের ক্ষেত্রে কোন আপোস করছেন না। ফলে যেটুকু উন্নয়ন কাজই হচ্ছে, সেটি ভালো হচ্ছে। এই ধারা ভবিষ্যতে অব্যাহত থাকলে পৌরবাসী দীর্ঘমেয়াদে এর সুফল পাবে।

শহরের চর শোলাকিয়া এলাকার কামাল মিয়া জানান, বর্তমান মেয়রের সময়ে যেসব রাস্তাঘাট হচ্ছে, মেয়র নিজে সেসব কাজের তদারকি করছেন। ফলে ঠিকাদাররা ফাঁকি দিতে পারছেন না। কাজের মান ভালো হওয়ায় সেসব টেকসইও হবে।

শহরের গাইটাল এলাকার রিকশাচালক লতিফ মিয়া বলেন, এই মেয়র যেইবা নিজে রাস্তাঘাটের কাম দেহাশোনা করতাছুইন, এইবা কাম ত বালা অইবয়ই। অহনও পৌরসভার অনেক রাস্তা ভাঙা। আমরা চাই, হেই গুলারও তাড়াতাড়ি কাম অউক।



[মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ি নয়। মতামত একান্তই পাঠকের নিজস্ব। এর সকল দায়ভার বর্তায় মতামত প্রদানকারীর]

এ বিভাগের আরও খবর



















প্রধান সম্পাদক: আশরাফুল ইসলাম

সম্পাদক: সিম্মী আহাম্মেদ

সেগুনবাগিচা, গৌরাঙ্গবাজার

কিশোরগঞ্জ-২৩০০

মোবাইল: +৮৮০ ১৮১৯ ৮৯১০৮৮

ইমেইল: kishoreganjnews247@gmail.com

©All rights reserve www.kishoreganjnews.com