কিশোরগঞ্জ নিউজ :: কিশোরগঞ্জকে জানার সুবর্ণ জানালা


পাকুন্দিয়ায় অবৈধ বালু উত্তোলন নিয়ে এমপি অনুসারী দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, পুলিশসহ আহত ১১

 স্টাফ রিপোর্টার | ২৭ মে ২০১৮, রবিবার, ৫:১৫ | পাকুন্দিয়া  


ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে অবৈধ বালু উত্তোলনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে পাকুন্দিয়ায় স্থানীয় সংসদ সদস্যের অনুসারী দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ব্যাপক লাঠিচার্জ ছাড়াও ১৯ রাউন্ড টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষে পুলিশসহ অন্তত ১১ জন আহত হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একজনকে আটক করে পুলিশ।

রোববার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত পাকুন্দিয়া থানা ও উপজেলা পরিষদের সামনের রাস্তায় এ ঘটনা ঘটে।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে ইজারার নামে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছে প্রভাবশালী একটি মহল। এতে এলাকার জনগণের বাড়িঘরসহ ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে এলাকার জনমনে ক্ষোভ বিরাজ করছিল। গত ২৩মে উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক এখলাছ উদ্দিন এলাকার জনগণকে নিয়ে বালু উত্তোলনে বাঁধা দেন। এতে বালু মহালের ইজারাদার বিল্লাল হোসেন ছাত্রলীগ আহ্বায়ক এখলাছ উদ্দিনের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির অভিযোগ এনে জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন। এর প্রতিবাদে রোববার সকাল ১০টার দিকে উপজেলা ছাত্রলীগ একটি বিক্ষোভ মিছিল ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে স্মারকলিপি প্রদানের আয়োজন করে।

খবর পেয়ে পৌর যুবলীগের আহবায়ক নাজমুল হক দেওয়ান ও যুগ্ম আহবায়ক রুবেল মিয়ার নেতৃত্বে ২০/২৫জনের একটি দল বিক্ষোভকারী ছাত্রলীগের দলটির উপর হামলা চালায়। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে।

সংঘর্ষে পাকুন্দিয়া থানার ওসি আজহারুল ইসলাম সরকার, পরিদর্শক (তদন্ত) সারোয়ার জাহান, এসআই আসাদুজ্জামান, কনস্টেবল হৃদয় খান, মামুন তালুকদার ও দিদারুল আলম ছাড়াও পৌর ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক ফরিদুজ্জামান, পাকুন্দিয়া কলেজশাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আরমিন, পৌর যুব লীগের আহবায়ক নাজমুল হক দেওয়ান, যুবলীগ কর্মী ছিদ্দিক হোসেন ও জামাল, ছাত্রলীগ নেতা সজল আহত হন। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে ইয়াছিন নামের এক যুবককে আটক করে পুলিশ।

এ ব্যাপারে উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক মোহাম্মদ এখলাছ উদ্দিন বলেন, ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করে আসছিল একটি প্রভাবশালী মহল। যার ফলে এলাকার জনগণের বাড়ি-ঘর, ফসলিজমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে এলাকার লোকজনকে সাথে নিয়ে বালু উত্তোলনে বাঁধা দেই। এ কারণে আমার বিরুদ্ধে চাঁদা দাবী করেছি মর্মে জেলা প্রশাসকের বরাবরে একটি মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করে। এর প্রতিবাদে আজ (রোববার) উপজেলা ছাত্রলীগ একটি বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে যুবলীগের আহবায়ক নাজমুল দেওয়ান ও যুগ্ম আহবায়ক রুবেল মিয়ার নেতৃত্বে ছাত্রলীগের মিছিলের উপর হামলা হয়।

পৌর যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক রুবেল মিয়া বলেন, এখলাছ উদ্দিনের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবীর অভিযোগটি সম্পূর্ণ সত্য। এই সত্য ঘটনাটিকে চাপা দেওয়ার জন্য আজকে তার নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। তাই আমরা এ মিছিলে বাধা দিয়েছি।

পাকুন্দিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আজহারুল ইসলাম সরকার পিপিএম জানান, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আছে। পুনরায় সংঘর্ষ এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।


[মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ি নয়। মতামত একান্তই পাঠকের নিজস্ব। এর সকল দায়ভার বর্তায় মতামত প্রদানকারীর]

এ বিভাগের আরও খবর