কিশোরগঞ্জ নিউজ :: কিশোরগঞ্জকে জানার সুবর্ণ জানালা


কটিয়াদীতে পাট ফলনে বিপর্যয়ের শংকা

 মো. রফিকুল হায়দার টিটু, স্টাফ রিপোর্টার, কটিয়াদী | ২৭ মে ২০১৮, রবিবার, ৬:৫৬ | কৃষি 


ষড় ঋতু পরিক্রমার এই দেশ। কিন্তু ঋতু বৈচিত্র যেন হারিয়ে যেতে বসেছে। গ্রীষ্ম বর্ষা শীত বসন্ত এর বর্ণ বৈশিষ্ট আলাদা করে খুব একটা চোখে পড়ে না। বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ দুই মাস গ্রীষ্মকাল হলেও এবার বৈশাখের শুরুতেই যেন বর্ষা নেমে এসেছে। যে সময়ে যে আবহাওয়ায় কৃষকের জমির পাট বড় হওয়ার কথা সেই সময়ে অকালবর্ষণে পাট ক্ষেত বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় পাটের চারা পানিতে তলিয়ে গেছে। বিপর্যয়ের আশংকা দেখা দিয়েছে পাট ফলনে। দিশেহারা কৃষক বৈরী প্রকৃতির সাথে পাট ফলনে যুদ্ধ করে চলছেন। অতিরিক্ত যত্ন, অতিরিক্ত শ্রম আর মাত্রাতিরিক্ত ব্যয়ে বুক বাঁধছেন স্বপ্নবান কৃষক।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, কটিয়াদী উপজেলার পৌর এলাকা ও ৯টি ইউনিয়নে চলতি বছর ১হাজার৭৩০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫ হাজার বেইল। যা গত বছরের তুলনায় প্রায় অর্ধেক। গত বছর ৩হাজার হেক্টরের উপরে জমিতে পাটের আবাদ করা হয়েছিল।

উৎপাদন খরচ বেশি, বাজার মূল্য কম এবং বৈরী আবহাওয়ার কারণে কৃষক পাট চাষে দিন দিন নিরুৎসাহীত হয়ে পড়ছেন। এ বছরও বৈরী আবহাওয়া দীর্ঘস্থায়ী হলে লক্ষমাত্রা অর্ধেকে নেমে আসবে। মৌসুমের শুরু থেকেই শিলা ও অতিবৃষ্টির কারণে পাট ক্ষেত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। জলাবদ্ধতায় তলিয়ে গেছে। ফলে পাট গাছ শক্ত হতে পারেছে না। দুর্বল হয়ে হেলে পড়ছে। এতে ফলন বিপর্যয়ের আশংকা দেখা দিয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে পাটের বাজারে। গত এক সপ্তাহ যাবত কটিয়াদী বাজারে প্রতিমণ পাট গড়ে ২শ’ টাকা বেড়েছে।

পাট ব্যবসায়ী শিবু প্রসাদ বণিক ও অনাথ বন্ধু সাহা জানান, এই মৌসুমে পাট উৎপাদন কম হওয়ার আশংকায় মিলগুলো পাট কিনে মজুদ করছে। ফলে কিছুটা দাম বেড়েছে।

উপজেলার চান্দপুর গ্রামের মস্তোফা কামাল নান্দু জানান, এলাকার সকল জমি বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। বট জাতের পাট এখন পর্যন্ত টিকে থাকলেও সুতি ও তোষা পাটে ব্যাপক ক্ষতির আশংকা রয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীর জানান, বৃষ্টিতে কিছু ক্ষতি হলেও আর বৃষ্টি না হলে বা আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে পাটের ফলনে তেমন ক্ষতির কোন সম্ভাবনা থাকবে না। তবে নানা কারণে কৃষক পাট চাষে নিরুৎসাহীত হয়ে তার পরিবর্তে আউশ ধান আবাদের দিকে ঝুঁকে পড়েছে।


[মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ি নয়। মতামত একান্তই পাঠকের নিজস্ব। এর সকল দায়ভার বর্তায় মতামত প্রদানকারীর]

এ বিভাগের আরও খবর