কিশোরগঞ্জ নিউজ :: কিশোরগঞ্জকে জানার সুবর্ণ জানালা


কিশোরগঞ্জ শহরজুড়ে তাণ্ডবের হোতা কিশোর সন্ত্রাসী নিলয়

 স্টাফ রিপোর্টার | ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮, শনিবার, ৯:৫৫ | কিশোরগঞ্জ সদর 


হঠাৎ করেই কিশোরগঞ্জ শহরে আলোচনায় চলে আসে দুর্ধর্ষ কিশোর গ্যাং। শান্ত কিশোরগঞ্জে নেমে আসে অস্থিরতার পদধ্বনি। মুখোশধারী সশস্ত্র কিশোর সন্ত্রাসীরা নেমে আসে রাস্তায়। এলোপাতাড়ি কুপিয়ে রাস্তার পাশের বাসাবাড়ি-দোকানপাট কুপিয়ে শহরজুড়ে চালায় একের পর তাণ্ডব।

আতঙ্ক ভর করে শহরবাসীর মাঝে। একাধিক এমন সন্ত্রাসী ঘটনার পরও অধরাই রয়ে গিয়েছিল কিশোর গ্যাংটির হোতাসহ সদস্যরা।

অবশেষে পুলিশের তৎপরতায় ধরা পড়ে দুর্ধর্ষ এই কিশোর গ্যাংটির হোতা সামাউল হক নিলয় (১৯)। গত ১১ সেপ্টেম্বর ঈদগাহ রোড রেলক্রসিং থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে কিশোরগঞ্জ মডেল থানার পুলিশ।

নিলয়ের গ্রেপ্তারের পরই বেরিয়ে আসে আরো এক ভয়ঙ্কর তথ্য। কেবল সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডই নয় এই গ্রুপটি জড়িত ছিলো কিলিংয়েও। নিলয়ের নেতৃত্বেই গত ১০ এপ্রিল কিশোরগঞ্জ শহরের বড়বাজার তেরিপট্টি এলাকায় নৃশংস হামলায় প্রাণ হারায় কলেজছাত্র রাজা।

কিশোর গ্যাং হোতা সামাউল হক নিলয় কিশোরগঞ্জ শহরের নীলগঞ্জ মোড়ের মো. কাজল মিয়ার ছেলে। সে শহরের আজিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র।

গ্রেপ্তারের পর আদালতের আদেশে সামাউল হক নিলয়কে ২দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। রিমান্ডে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে নিলয় জানায়, তার গ্রুপে সমবয়সী একশ’র বেশি কিশোর নেশাগ্রস্থ হয়ে শহরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতারি ভাবে হামলা চালায়। মানুষ ভয় পেলে তাদের আনন্দ বেড়ে যায়। নেশার টাকা বাবা-মার কাছ থেকে কৌশল করে নিয়ে আসে এবং বিভিন্ন সময় বিভিন্ন এলাকায় কোন উদ্দেশ্য ছাড়াই ভয়ংকর অ্যাকশনে যায়। কখনও তার বন্ধুদের সাথে কারো কোন ঝগড়া-ঝাটি হলে সকলে সংঘবদ্ধভাবে হামলা চালায়।

সিসি ফুটেজে দেখা যায়, বড়বাজার তেরিপট্টি মোড়ে রাজা হত্যার সময় ১৬/১৭ জন কিশোর মুখোশ পরে আনন্দের সাথে কোপাচ্ছে। রাজা হত্যার পর তাদের সাহস আরো বেড়ে যায়। তারা আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে।

কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু শামা মো. ইকবাল হায়াত জানান, পুলিশ সাধ্যমত সন্ত্রাস নির্মূল ও কিশোর অপরাধীদেরকে ধরার চেষ্টা করছে। পুলিশের একাধিক অভিযান পরিচালনা করে ইতোমধ্যে নিলয়ের সহযোগী সানি, পিয়াস, সোহাগসহ ৫ জন গ্রেপ্তার হয়েছে। তারা বর্তমানে জেলহাজতে আছে।

এছাড়া কিশোর অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণ করার জন্য অভিভাবকদেরও সচেতন হওয়া দরকার বলে মন্তব্য করেন ওসি আবু শামা মো. ইকবাল হায়াত।


[মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ি নয়। মতামত একান্তই পাঠকের নিজস্ব। এর সকল দায়ভার বর্তায় মতামত প্রদানকারীর]

এ বিভাগের আরও খবর