আবারো এক অসহায় শিক্ষার্থীর পাশে দাঁড়ালেন কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) তরফদার মো. আক্তার জামীল। কাওসার আহমেদ রাব্বী নামে নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে তিনি ব্যক্তিগত অর্থে বই কিনে দিয়েছেন। এডিসি জেনারেলের মানবিক এই উদ্যোগে ছেলের লেখাপড়া নিয়ে নতুন করে আশার আলো দেখছেন হতদরিদ্র বিধবা ডলি বেগম।
কাওসার আহমেদ রাব্বী কিশোরগঞ্জ মডেল বয়েজ স্কুলের শিক্ষার্থী। তারা চার ভাই ও এক বোন। শহরের গাইটাল এলাকার বাসিন্দা রাব্বীর বাবার নাম আব্দুর রশীদ।
প্রায় তিন বছর আগে রাব্বীর বাবা আব্দুর রশীদ মারা যান। রাব্বীর বড় ভাই রাসেল সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে বাসায় পড়ে রয়েছে। ফলে অসহায় মা ডলি বেগমের সংসারে এখন নুন আনতে পান্তা ফুরোনোর অবস্থা।
এদিকে শিক্ষাবর্ষের তিন মাস চললেও এখনো ছেলে রাব্বীকে কিনে দিতে পারেননি স্কুলের তালিকাভূক্ত পাঠ্যপুস্তক। ফলে বইয়ের অভাবে রাব্বীর পড়াশোনাও থমকে রয়েছে।
কোন উপায় না পেয়ে ডলি বেগম সোমবার (৪ মার্চ) দুপুরে ছুটে যান জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে। অশ্রুসিক্ত নয়নে ঢুকেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) তরফদার মো. আক্তার জামীলের কক্ষে। তরফদার মো. আক্তার জামীলের হাতে বইয়ের একটি তালিকা তুলে দিয়ে জানান ছেলেকে বই কিনে দিতে না পারার অসহায়ত্বের কথা।
সব শুনে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) তরফদার মো. আক্তার জামীল অসহায় ডলি বেগমকে বই কিনে দেয়ার আশ্বাস দিয়ে বাসায় পাঠান। ব্যক্তিগত অর্থে রাব্বীর জন্য তালিকাভূক্ত বইগুলো কেনার পর বুধবার (৬ মার্চ) দুপুরে মা ডলি বেগমের উপস্থিতিতে তুলে দেন রাব্বীর হাতে। পাশাপাশি মা ও ছেলে আপ্যায়িত করেন এডিসি জেনারেল জামীল।
বইগুলো পেয়ে দারুণ উচ্ছ্বসিত রাব্বী জানায়, পড়াশুনা করে সে বড় একজন অফিসার হওয়ার স্বপ্ন দেখে। বইয়ের অভাবে লেখাপড়ায় ব্যাঘাত ঘটায় তার সেই স্বপ্ন ফিকে হয়ে আসছিল। এবার বই পাওয়ায় আবারও নতুন উদ্যমে পড়ালেখা করার স্বপ্ন দেখছে।
এ সময় পাশে দাঁড়িয়ে থাকা রাব্বীর মা ডলি বেগমের চোখের কোণে চিকচিক করছিল আনন্দাশ্রু। ছেলেকে নিয়ে আবারও নতুন করে স্বপ্ন দেখছেন তিনিও।