কিশোরগঞ্জ নিউজ :: কিশোরগঞ্জকে জানার সুবর্ণ জানালা


শোলাকিয়া জঙ্গি হামলায় আত্মোৎসর্গকারী পুলিশ সদস্যদের স্মরণ

 স্টাফ রিপোর্টার | ৭ জুলাই ২০২২, বৃহস্পতিবার, ২:৩৭ | বিশেষ সংবাদ 


কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানের চেকপোস্টে ২০১৬ সালের ৭ জুলাই ঈদুল ফিতরের দিনে জঙ্গি হামলায় আত্মোৎসর্গকারী বীর পুলিশ সদস্যদের স্মৃৃতির প্রতি জেলা পুলিশ গভীর শ্রদ্ধা জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) বেলা ১১টায় ঘটনাস্থল চরশোলাকিয়া সবুজবাগ মোড়ে নির্মিত অস্থায়ী বেদীতে ফুল দিয়ে পুলিশ সুপার (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মো. মাশরুকুর রহমান খালেদ বিপিএম (বার) শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

এছাড়া জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম, জেলা পরিষদ প্রশাসক বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট মো. জিল্লুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এম এ আফজল এবং কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মাহমুদ পারভেজ শ্রদ্ধা নিবেদনে অংশ নেন।

এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. মোস্তাক সরকার, অতিরিক্ত পুলিশ সপুার (ক্রাইম এন্ড অপস্) মোহাম্মদ নূরে আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) অনির্বাণ চৌধুরী, সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আলআমিন হোসাইন, কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ দাউদ. পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোখলেছুর রহমান প্রমুখসহ জেলা পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে নিহত পুলিশ সদস্যদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।

পরে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম, পুলিশ সুপার সুপার (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মো. মাশরুকুর রহমান খালেদ বিপিএম (বার), জেলা পরিষদ প্রশাসক বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট মো. জিল্লুর রহমান প্রমুখকে সাথে নিয়ে কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মাহমুদ পারভেজ পুনঃস্থাপিত ‘ঝর্ণারাণী ভৌমিক সড়ক’ এর নামফলক উন্মোচন করেন।

এছাড়া তারা বন্দুকযুদ্ধের সময় নিজ বাসায় মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাওয়া ঝর্ণা রাণী ভৌমিকের বাসভবনে যান এবং সেখানে ঝর্ণা রাণী ভৌমিকের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৭ জুলাই শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে ঈদুল ফিতরের জামাত ও জামাতের ইমাম মুফতি ফরিদ উদ্দিন মাসউদের ওপর হামলার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে জঙ্গিরা চাপাতি, বোমা এবং পিস্তল নিয়ে হামলা চালিয়েছিল। জঙ্গিরা চাপাতি দিয়ে পুলিশের দুই সদস্য আনসারুল হক ও জহিরুল ইসলামকে কুপিয়ে হত্যা করে।

খবর পেয়ে অন্য পুলিশ সদস্যরা এগিয়ে গিয়ে তাদের প্রতিরোধ করলে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কুমিল্লার সন্তান জঙ্গি আবির রহমান (২৩) গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। এছাড়া নিজ বাসায় মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে ঝর্ণা রাণী ভৌমিক (৪০) নামে এক গৃহবধূ নিহত হয়। এ সময় আহত হন আরও ১২ পুলিশ সদস্য।

বন্দুকযুদ্ধের একপর্যায়ে র‌্যাবের হাতে বুকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় অপর জঙ্গি দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট এলাকার শফিউল ইসলাম (২২) ধরা পড়ে। শফিউল পরবর্তী সময়ে এনকাউন্টারে মারা যায়। কিশোরগঞ্জ শহরের পশ্চিম তারাপাশা এলাকার জাহিদুল হক তানিম (২৬) নামে এক যুবকও ঘটনাস্থল থেকে আটক হয়।

পুলিশ ২০১৮ সালের ১২ সেপ্টেম্বর চাঞ্চল্যকর এ মামলাটির অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করে। অভিযোগপত্রে মোট ২৪ জন আসামির নামাল্লেখ করা হলেও ১৯ জন আসামি দেশের বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়।

২০১৮ সালের ২৮ নভেম্বর জীবিত পাঁচ আসামি জঙ্গি নেতা বড় মিজান, রাজিব গান্ধী, সোহেল মাহফুজ, আনোয়ার হোসেন ও জাহিদুল হক তানিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।


[মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ি নয়। মতামত একান্তই পাঠকের নিজস্ব। এর সকল দায়ভার বর্তায় মতামত প্রদানকারীর]

এ বিভাগের আরও খবর