কিশোরগঞ্জ নিউজ :: কিশোরগঞ্জকে জানার সুবর্ণ জানালা


ট্রেনের ভেতর কাঁদছিল শিশুটি, নেয়া হয়েছে ময়মনসিংহ রেলওয়ে থানায়

 স্টাফ রিপোর্টার | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯, মঙ্গলবার, ১০:৩০ | বিশেষ সংবাদ 


মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর), সময় তখন বিকাল ৩টা। ময়মনসিংহ রেলস্টেশনের শেষ গন্তব্যে দাঁড়িয়ে থাকা আন্তঃ নগর বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনের ভেতর দাঁড়িয়ে কাঁদছে নয় বছর বয়সী একটি ছেলে শিশু। ময়মনসিংহ রেলওয়ে পুলিশের এক সদস্য বিষয়টি দেখে শিশুটির অভিভাবকের খোঁজ করেন। কিন্তু আশপাশে কোথাও অভিভাবকের দেখা মিলেনি।

শিশুটিকে জিজ্ঞাসা করে রেলওয়ে পুলিশের ওই সদস্য জানতে পারেন, ছেলেটি ট্রেনে উঠে কিশোরগঞ্জ থেকে ময়মনসিংহ এসেছে। তার সাথে আর কেউ নেই। এ পরিস্থিতিতে রেলওয়ে পুলিশের ওই সদস্য বিষয়টি ময়মনসিংহ রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মোশাররফ হোসেনকে বিষয়টি অবহিত করেন।

ময়মনসিংহ রেলওয়ে থানার ওসি মোশাররফ হোসেন ছেলেটিকে রেলওয়ে থানায় নিয়ে আসার নির্দেশ দেন। রেলওয়ে থানায় নিয়ে আসার পর পরম যত্নে শিশুটির কাছে নাম-ঠিকানা জানতে চান ওসি মো. মোশাররফ হোসেন।

শিশুটি তখন জানায়, তার নাম তাজুল ইসলাম। পিতার নাম দুলাল মিয়া। তার বাবা একজন রিক্সাচালক। মায়ের নাম ছফুরা আক্তার। তিনি গার্মেন্ট কর্মী এবং ঢাকায় থাকেন। তাজুলের বাড়ি কিশোরগঞ্জের পাতালজান গ্রামে। সে পাতালজান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র এবং তার রোল নং ৪৭ বলেও জানায় তাজুল। কিন্তু বাবা-মা কিংবা আত্মীয়স্বজনের কারো মোবাইল নম্বর জানে না সে।

এ অবস্থায় শিশুটিকে তার অভিভাবকের কাছে পৌঁছে দিতে উদ্যোগী হন ময়মনসিংহ রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মোশাররফ হোসেন। মানবিক এই পুলিশ কর্মকর্তা ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপে ছেলেটির ছবিসহ বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে ছেলেটির অভিভাবকদের কাছে সংবাদটি পৌঁছানোর আবেদন করেন।

এছাড়া বিভিন্ন মাধ্যমে মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার বৌলাই ইউনিয়নের পাতালজান আবু সাঈদ ভূঞা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকের সাথেও তিনি যোগাযোগ করেছেন। এর বাইরে শিশুটিকে নিজের হেফাজতে রেখে তার খাওয়া-দাওয়াসহ সার্বিক দেখাশোনাও করছেন মানবিক এই মানুষটি।

ময়মনসিংহ রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মোশাররফ হোসেন জানান, ছেলেটির কাছে বেশ কিছু নগদ টাকাও রয়েছে। শিশুটি বর্তমানে তার হেফাজতে ময়মনসিংহ রেলওয়ে থানায় রয়েছে। কেউ শিশুটির ব্যাপারে তার অভিভাবকের খোঁজ দিতে পারলে তাকে ০১৭৩২৩১০৩২০ অথবা ০১৭৫০০৭৮৭০৬ মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করার জন্যও অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।


[মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ি নয়। মতামত একান্তই পাঠকের নিজস্ব। এর সকল দায়ভার বর্তায় মতামত প্রদানকারীর]

এ বিভাগের আরও খবর